দ্রুত ড্যাপের গেজেট করা উচিত: বসুন্ধরা চেয়ারম্যান

ঢাকা: যত দ্রুত সম্ভব ড্যাপের গেজেট করা উচিত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলডিএ) সভাপতি ও দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।

তিনি বলেন, আজকে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ এই জন্য যে, ড্যাপকে একটি সেমিনার পর্যায়ে আনতে পেরেছেন।

 

তিনি ড্যাপ নিয়ে যেসব অংশীজন কথা বলতে চেয়েছেন, তাদের কাউকে মানা করেননি। আমি মনে করি যত দ্রুত সম্ভব ড্যাপের গেজেট করা উচিত।

২০১৬-৩৫ সালের জন্য নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) নিয়ে শনিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন আহমেদ আকবর সোবহান।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ২০১০ সালের ড্যাপ দেখে মনে হয়েছিল, বেসরকারিখাতকে একবারে নিশ্চিহ্ন করে করে দেওয়া হবে। তখন যিনি পূর্তমন্ত্রী ছিলেন, তার একটাই উদ্দেশ্যে ছিল—বেসরকারিখাত বলতে কোনো জিনিস থাকবে না। সবকিছু করবে সরকার। তখন সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন রিহ্যাবের সভাপতিসহ আমরা প্রতিবাদ করলাম। আমি প্রতিবাদ করলাম। আমার সঙ্গে বাদ-প্রতিবাদ অনেক কিছু হলো। পরে এ নিয়ে অনেক তর্কাতর্কি হলো। তখনকার এক প্রখ্যাত প্রকৌশলী, বাংলাদেশের গর্ব ছিলেন, তিনি নিজেও স্বীকার করলেন ওই ড্যাপে ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল। ড্যাপে অনেক ভুল-ত্রুটি হয়েছে। সেই ভুল ত্রুটি নিয়েই ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে হবে। গেজেট করতে হবে এবং সেটাই সবার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল একটাই—শুধু রাজউক, সরকারিখাতই ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা আবাসন যাই বলেন, সবই করবে রাজউক ও সরকার।

আহমেদ আকবর সোবহান আরও বলেন, তখন রিহ্যাবের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সেখানে সবাই বললেন—যে ড্যাপ হচ্ছে, তা তো দেশকে ধ্বংস করে দেবে। তখন প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে নিয়ে গেলেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন—আমি ড্যাপ রিভিউ কমিটি করে দিয়েছি। তখন তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী রিভিউ কমিটি গঠন করেছিলেন সাতজন মন্ত্রী, ২১ জন সচিবকে নিয়ে। সেই রিভিউ কমিটি ড্যাপ পর্যালোচনা করে, যারা শুদ্ধ তাদের নতুন করে অনুমোদন দেওয়ার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় মনোবল না থাকলে আজকে আবাসন খাতের ঢাকার দুই হাজারসহ সারাদেশের ২০ হাজার ডেভেলপার নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। প্রধানমন্ত্রী শুধু একজন রাজনীতিবিদ না। তিনি আমাদের চেয়ে অনেক বড় প্ল্যানার। তিনি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি দূরে দেখেন। আমরা যেটি আজ ভাবি, তিনি তা আগামীকালের জন্য চিন্তা করেন। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী যদি এই দূরদর্শী ভূমিকা না নিতেন, আজকে হয়তো বাংলাদেশ এই পর্যায়ে আসতো না।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা নিশ্চিয়ই জানেন জিডিপিতে আবাসনখাতের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অবদান আছে। এই খাতের সঙ্গে ৪৭১টি খাতে ২০ হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠান জড়িত। অন্ততপক্ষে এক কোটি লোক আবাসনখাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আজকে সত্যি কথাটা বলতে হয়—অনেকে হয়তো জানেন না। বলা যায়, সেদিন ড্যাপ ফাইনাল হয়েছিল একটি পত্রিকা অফিসে। সেদিন যদি আমরা ড্যাপ গ্রহণ করতাম, তাহলে সেদিন থেকেই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ওত পেতে ছিল। সেদিন আমরা বাধা না দিলে আজকে দেশের অন্য রূপ হতো। সেদিন থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। আমাদের পরিবেশ দরকার। আবাসনখাতে সবাই শিক্ষিত। এখানে এমন কোনো লোক নেই, যারা পরিবেশ ধ্বংস করে দেশের উন্নয়ন করবেন। পরিবেশ না থাকলে আমরা কেউ বাঁচবো না। আজকে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হওয়া সত্ত্বেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী কয়লায় চালিত প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিবেশ নিয়ে আমরা সবাই সচেতন। পরিবেশ না বাঁচলে আমরা কেউ বাঁচবো না। আজকে আমেরিকা সবচেয়ে বেশি পরিবেশবাদী, সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষণকারীও তারা। আমাদের মনে রাখতে হবে—আমরা পরিবেশ ঠিক রাখবো। এ ব্যাপারে সবাইকে আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে এবং পরিবেশ ঠিক রেখেই উন্নয়ন করতে হবে।

আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আজকে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ এই জন্য যে, ড্যাপকে একটি সেমিনার পর্যায়ে আনতে পেরেছেন। তিনি ড্যাপ নিয়ে যেসব অংশীজন কথা বলতে চেয়েছেন, তাদের কাউকে মানা করেননি। আমি মনে করি যত দ্রুত সম্ভব ড্যাপের গেজেট করা উচিত। রিহ্যাবের যারা ডেভেলপার তারা হাজার হাজার চুক্তি করে রেখেছেন। কিন্তু তারা কোথাও ডেভেলপমেন্ট করতে পারছেন না। ঢাকায় ৫০ হাজার প্ল্যান পাস হচ্ছে না ড্যাপের কারণে। এই ড্যাপ নিশ্চয়ই এমন কোনো জিনিস না যে, এটা পরিবর্তন হবে না। নিশ্চয়ই ড্যাপের রিভিউ কমিটি থাকবে। যাদের যেখানে অসুবিধা হবে, সমন্বয় হবে। কিন্তু আমার মনে হয় এটাই সময়। এখন গেজেট না হলে আর কোনদিনই সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, সবাই নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, সবাই পরিবেশসম্মত ভবন করবেন। পাশে খেলার মাঠ থাকবে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে। ঢাকা শহরে ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র একটি বাদে ৯৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলার মাঠ নেই। আমি পূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করব, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি খেলার মাঠ থাকতে হবে। এটা না হলে মানুষের বিকাশ হবে কীভাবে? এসব ব্যাপারে রাজউক আরও আন্তরিক হবে আশা করছি।

আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, এবারের অনেক সুন্দরভাবে রাজউকের প্রকল্প পরিচালক ড্যাপ করেছেন। মানুষের ঘরে ঘরে, বাড়িতে বাড়িতে গেছেন। প্রত্যেকের কাছ থেকে তথ্য ও পরিসংখ্যান নিয়েছেন। কিন্তু এটা সত্যি কথা যে, বাস্তবায়ন করা এত সহজ হবে না, যদি আমরা সবাই মিলে রাজউক ও পূর্ত মন্ত্রণালয়কে সাহায্য না করি। ঢাকা শহরে দুটো সুন্দর রাস্তার একটি মাদানি এভিনিউ, আরেকটি তিনশ’ ফুট। কিন্তু কোনো রক্ষাণাবেক্ষণ নেই। এ দুটি রাস্তা ঢাকা শহরের গর্ব করার মতো বলা যায়। অথচ কোনো রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় রাতের বেলায় সব ট্রাক-বাসের গ্যারেজ হয়ে গেছে। এসব ব্যাপারেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, আগের ড্যাপের গেজেটে যেসব হাউজিং প্রকল্প অনুমোদন হয়েছিল, সেসব যেন ঠিক থাকে। কিছু জিনিস আমার দুঃখ লাগে যে, প্রেসিডেন্ট গেজেট করে দিয়েছেন, তার ওপরে দেখি রাজউকের বেশ কিছু অফিসার হাত বোলান। প্রেসিডেন্ট যেখানে সই করেছেন, সেখানে রাজউকের একটা ক্লার্ক বলেন, এই গেজেট মানি না। তাহলে কোথায় আমরা আছি!

তিনি বলেন, রাজউককে অবশ্যই ডিজিটালাইজড করতে হবে। প্ল্যানের ব্যাপারে সময় নির্ধারণ করতে হবে। মানুষের ভোগান্তিুও কমাতে হবে। রাজউকের ভোগান্তির ব্যাপারটি সর্বজনবিদিত। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু রাজউককে গতিশীল করতে হবে। যারা ডেভেলপার আছেন, তারা সহজভাবে যেন প্ল্যান পান, সে বিষয়টি রাজউক ও পূর্ত মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করতে হবে। রাজউকের চেয়ারম্যান দেওয়া হোক কমপক্ষে তিনবছরের জন্য।

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন হলো—রাজউকে একজন চেয়ারম্যান এসে কাজ শুরু করেন। কয়দিন পর তিনি সচিব হয়ে চলে যান। এখানে এমন একজনের চেয়ারম্যান হওয়া উচিত, যিনি কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ বছর কাজ করতে পারবেন। এভাবে ২, ৩, ৪ মাস পরে চলে গেলে কারও রাজউকের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে না। রাজউকে ঢোকার পর ছয় মাস লাগবে বুঝতে। কিন্তু বোঝার সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যান সচিব হয়ে চলে গেলে তারা কাজ করার সময় পান না। ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে হলে কমপক্ষে তিন থেকে চার বছরের জন্য একজন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিন।

তিনি আরও বলেন, করোনায় ১০ লাখ লোক কাজ হারিয়েছেন। এখন একমাত্র আবাসন খাত, যেখানে কর্মসংস্থান সম্ভব। সারাদেশে কিন্তু প্রতিটি অলি-গলিতে মানুষ উন্নয়ন করছেন এবং সেই সুযোগটা দিন। দেশ, জাতি ও বিনিয়োগের জন্য ড্যাপ জরুরি। সময়ক্ষেপণ না করে যত শীঘ্রই সম্ভব ড্যাপের প্রস্তাবনা আকারে অনুমোদন দিন। আমার মনে হয়, এটা রিভিউ করা সম্ভব। রিভিউ কমিটি নিশ্চয়ই শেষ হয়ে যাবে না।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি বলেন, ড্যাপের চ্যালেঞ্জ হলো বাস্তবায়নে। আশা করি, ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে পারবো। রাজধানীকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। রাজউকের বিরুদ্ধে আমরা অনেক অভিযোগ পাই। রাজউককে দ্রুত ডিজিটালাইজ করা দরকার। রাজউক চাইলে দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, উন্নত শহর গড়ার সব উপাদান নিয়ে ড্যাপ করা হয়েছে। তাই সবাই মিলে কাজ করলে ড্যাপ বাস্তবায়ন সম্ভব। এফবিসিসিআই সব অংশীজনদের নিয়ে ড্যাপ বাস্তবায়নে করণীয় নির্ধারণ করবে। বেসরকারিখাতকে সঙ্গে নিয়েই ড্যাপ বাস্তবায়নে সরকারকে এগুতে হবে। এবারের ড্যাপ যেন বাস্তবায়নযোগ্য হয়, এফবিসিসিআই সেই উদ্যোগ নেবে।

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল বলেন, ড্যাপের সঙ্গে বাংলাদেশের যার এক ইঞ্চি জমি আছে, তারও ভাগ্য জড়িত। ড্যাপের দুই হাজার পৃষ্ঠার ডুকেমেন্টস পড়ে বুঝতে সময় লাগবে। কারণ, এবারের ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে হলে, ঢাকা থেকে ৫০ লাখ লোক বের করে দিতে হবে। ইতোমধ্যে ড্যাপের বাস্তবায়ন পিছিয়ে গেছে। ২০৩৫ সাল নাকি ৪০ সালে ড্যাপের বাস্তবায়ন হবে, আমি তা নিয়ে সন্দিহান। ৫৩ সংস্থার সম্মিলিত সমন্বয় ছাড়া ড্যাপ বাস্তবায়ন সম্ভব না। এর আগে ড্যাপ দিয়ে বেসরকারিখাত ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে এখন ড্যাপ জনগণকে কী বার্তা দেবে, সেটাও সরকারকে ভাবতে হবে। আমি এটুকু বলতে পারি—ড্যাপে ডেভেলপাররা ধ্বংসের মুখে পড়বেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ইকবাল হাবীব, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সিইও সেলিম রেজা, ডিপিডিসির গিয়াসউদ্দিন জোয়াদ্দার, বাংলাদেশে পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল।

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২১
এসই/এমজেএফ

‘বই পেলাম, লেখাপড়ার গতিও বেড়ে গেল’

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের উদ্যোগে এবং বসুন্ধরা নুডলসের সহযোগিতায় কালের কণ্ঠ শুভসংঘ গতকাল নীলফামারীর রামগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইসহ শিক্ষা উপকরণ দেয়।

‘এক মাস আগে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছি। বাবা এখন পর্যন্ত বই কিনে দিতে পারেননি। আজ বই পেয়ে খুবই ভালো লাগছে।’ ক্লাসের নতুন বই-খাতা ও ব্যাগ পেয়ে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে নীলফামারীর রামগঞ্জ কলেজের শিক্ষার্থী জহুরা আকতার। জহুরা ছাড়াও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের উদ্যোগে এবং বসুন্ধরা নুডলসের সহযোগিতায় কালের কণ্ঠ শুভসংঘের দেওয়া পাঠ্য বইসহ শিক্ষা উপকরণ পেয়ে এমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আরো অনেক শিক্ষার্থী। গতকাল শনিবার নীলফামারীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের রামগঞ্জ কলেজের ২৫০ শিক্ষার্থীর মধ্যে এসব বিতরণ করা হয়।

দুপুর ১২টার দিকে রামগঞ্জ কলেজ চত্বরে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বই পেয়ে কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী লিয়ন ইসলাম বলে, ‘বই না থাকায় থেমে যাচ্ছিল আমার লেখাপড়া। এখন বই পেলাম। লেখাপড়ার গতিও বেড়ে গেল। ধন্যবাদ জানাই কালের কণ্ঠ শুভসংঘ ও বসুন্ধরা নুডলসকে।’ সুলতানা রাজিয়া একাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে শুভসংঘের দেওয়া বই পেয়ে। ওই সহযোগিতা না পেলে হয়তো থেমে যেত তার লেখাপড়া। এবার দ্বিতীয় বর্ষের বই পেয়ে সে বলে, ‘কলেজের শিক্ষার্থীরা দরিদ্র পরিবারের। তাদের অনেকেই বিভিন্ন কাজ করে বই কেনার টাকা জোগাড় করে। এখন আর সেটি করতে হবে না।’

নীলফামারী জেলা শুভসংঘের আয়োজনে অনুষ্ঠানে মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সরওয়ার মানিক, রামগঞ্জ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সফিয়ার রহমান, বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এরিয়া সেলস ম্যানেজার আব্দুল কাদের, নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী, শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, কালের কণ্ঠ’র রংপুর ব্যুরোপ্রধান স্বপন চৌধুরী, নীলফামারী প্রতিনিধি ভূবন রায় নিখিল, কেন্দ্রীয় শুভসংঘের যুগ্ম সম্পাদক সোহেল রানা স্বপ্ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া রংপুর ও নীলফামারী শুভসংঘের বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন নীলফামারী শুভসংঘের সভাপতি ও রামগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন।

এমন মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘কালের কণ্ঠ শুভসংঘের এমন উদ্যোগ আলোর দুয়ার খুলে দেওয়ার কাজ করেছে। সে আলো একটি শিক্ষিত ও উন্নত জাতি গঠনে কাজ করবে।’

শিক্ষাবিদ সরওয়ার মানিক বলেন, ‘শিক্ষাজীবনে সফলতা আনতে শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বই বড় একটি সম্বল। কালের কণ্ঠ শুভসংঘ শিক্ষার্থীদের সহায়তা করার যে মহতী উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

হতদরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়াকে ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন ও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

Source:  কালের কণ্ঠ

Bashundhara Group Chairman greeted with floral bouquet

Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan was greeted with floral bouquet by the newly elected chairman of Daudpur Union Parishad under Rupganj upazila of Narayanganj Nurul Islam Jahangir Master.

The event took place in Bashundhara Chairman’s residence at Bashundhara Residential Area in Baridhara of the capital.

Rafiqul Islam, Chairman of Rongdhanu Group and Kayetpara Union Parishad, was also present on the occasion.

Bashundhara Group Chairman mourns Rafique-ul-Huq’s death

Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan has mourned the death of renowned lawyer and former attorney general Barrister Rafique-ul-Huq.

In a message, the Bashundhara Group Chairman on Saturday expressed deep shock and sorrow at the demise of the eminent jurist of the country.

Ahmed Akbar Sobhan prayed for the eternal salvation of the departed soul and expressed sympathy to the bereaved family members.

Barrister Rafique breathed his last at 8:30 in the morning while undergoing treatment at ICU in Ad-Deen Hospital in the capital. He was 85.

বসুন্ধরায় হচ্ছে বিচারকদের আবাসন প্রকল্প

বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্খার আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই হয়ছে।

জানা গেছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল অফির্সাস হাউজিং প্রকল্প। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসে কর্মরত বিচারকগণের আবাসন ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

জানা গেছে, বিচারকদের আবাসন প্রকল্প গ্রহণের লক্ষ্যে সব রকমের সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি।
রাজধানীর খিলক্ষেত থানাধীন ৩০০ ফিট কুড়িল-পূর্বাচল রাস্তার উত্তরে বিসিএস (প্রশাসন) সার্ভিসের আবাসন প্রকল্প সংলগ্ন ৪২৭২ কাঠা (কম/বেশি) ভূমিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

এ উপলক্ষে জুডিসিয়াল অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইস্টওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রা.) লিমিটেডের রেজিস্ট্রি চুক্তি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের বাস ভবনে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আহমেদ আকবর সোবহান এবং বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী এবং সংগঠনের মহাসচিব, আইন বিচার বিভাগের যুগ্ম-সচিব (প্রশাসন-১) বিকাশ কুমার সাহা।

এ সময় আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারসহ বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আবাসন প্রকল্পের প্লট নির্মাণের জন্য নির্ধারিত ভূমির পরিমাণ হবে ৩২৮৮ কাঠা (কম/বেশি) এবং বেসরকারি হাউজিং নীতিমালা অনুযায়ী রাস্তা, ড্রেন, স্কুল, শপিং সেন্টার, খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্র ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ নাগরিক সুবিধার জন্য নির্ধারিত ভূমির পরিমান হবে ৯৮৪ কাঠা (কম/বেশি)। এতে ৩৩৩টি (কম/বেশি) ০৫ কাঠা আয়তনের এবং ৫৪১টি (কম/বেশি) ০৩ কাঠা আয়তনের সর্বমোট ৮৭৪টি প্লট থাকবে। প্রকল্পে সর্বমোট ১১৪০ জন বিচারকের আবাসন ব্যবস্থা থাকবে।

Bashundhara Group to provide support for Army’s Jolshiri Project

Bashundhara Group, a leading industrial conglomerate in the country, will provide its overall support for the development work of Bangladesh Army’s Jolshiri Abashon Project in the capital.

To this effect, an agreement was signed at the Army Headquarters in Dhaka Cantonment on Monday.

Jolshiri Abashon Project Chairman Maj Gen Md Abu Sayed Siddique and Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan signed the agreement on behalf of their respective sides in the presence of Army Chief General Aziz Ahmed.
Bashundhara Group has already provided 2,600 bighas of land, considering the priority of Prime Minister Sheikh Hasina to make this project a success.

It was said at the function that Bashundhara Group will assist in the expansion and development of Jolshiri Abashon Project.

Bashundhara Group and Jolshiri will jointly set up a large mosque in the project area and will also work for beautification of the project.

Addressing the signing ceremony, Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan said: “We are happy to provide support on behalf of Bashundhara Group for the expansion and development of Bangladesh Army’s Jolshiri Abashon Project.”

“I hope that implementation of this project will be completed within the stipulated time in collaboration with both the parties,” he added.

Speaking on the occasion, Army Chief General Aziz Ahmed said the Army and Bashundhara Group will cooperate in the implementation of the projects.
He has commended Bashundhara Group for its overall support for the implementation of this project and especially thanked Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan.

Quarter Master General of Bangladesh Army Lieutenant General Md Shamsul Haque, Bashundhara Group Managing Director Sayem Sobhan Anvir, Bashundhara Group Vice-Chairman Safwan Sobhan Tasvir, Bashundhara Group Senior Executive Director Liakat Hossain, Rongdhanu Group Chairman Rafiqul Islam Rafiq and senior officials from both sides were present at the function.

Bashundhara Group chairman condoles death of Sahara Khatun

Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan has expressed profound shock at the death of Awami League (AL) Presidium Member and former Home Minister Advocate Sahara Khatun MP, who passed away at Bumrungrad International Hospital in Bangkok, Thailand on Thursday night.

In a condolence message, Ahmed Akbar Sobhan said the country lost an honest and sincere politician. Her death is an irreparable loss to the country’s political arena. People will remember her contributions with due respect for long.

“I express my deep sympathy to the members of the bereaved family and pray to the Almighty Allah to give them strength to bear this irreparable loss and for the salvation of the departed soul,” he added.
Sahara Khatun passed away at 11:25pm (local time) at Bumrungrad International Hospital in Bangkok.

Earlier on Monday, Advocate Sahara Khatun was flown to Thailand for better treatment.

The lawmaker of Dhaka-18 constituency was released from Dhaka’s United Hospital around 11:20 in the morning on the same day.

On June 2, she had been admitted to United Hospital in the capital’s Gulshan area with allergy, fever and cold-related complications. Later she was shifted to the ICU on June 19 as her condition deteriorated.

Advocate Sahara Khatun was elected as lawmaker three times from Dhaka-18 constituency.

Bashundhara Group Chairman mourns Abdul Monem Group’s founder death

Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan expressed his profound shock at the sad demise of Abdul Monem Group’s founder Abdul Monem Khan.

In a condolence message, he also prayed for salvation of the departed soul and expressed deep sympathy to the bereaved members of his family.
Abdul Monem breathed his last while undergoing treatment at at Combined Military Hospital (CMH) in Dhaka on Sunday noon.

A veteran civil engineer by profession Abdul Monem masterminded the AML Business, its expansion and growth horizontal integration and diversification.

For his achievement in this respect, he was awarded ‘Commercially Important Person (CIP)’ status by the Government of Bangladesh several times.

নৌবাহিনীকে মাস্ক, পিপিই ও খাদ্যসামগ্রী দিলো বসুন্ধরা গ্রুপ

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রথম থেকেই দেশ ও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এর অংশ হিসেবে রোববার (৫ এপ্রিল) নৌবাহিনীকে পিপিই, মাস্ক ও খাদ্যসামগ্রী প্রদান করেছে দেশের এ শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী।

রোববার সকাল ১১টার দিকে নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরীর কাছে ৫০ হাজার মাস্ক, ৫০০ পিপিই ও দুই ট্রাক (৭০০ প্যাকেট) খাদ্যসামগ্রী হস্তান্তর করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর ও গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান তাসভীর।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তরকে এক হাজার পিপিই ও ৫০ হাজার মাস্ক দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ। এছাড়া, গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্র্যাফিক (উত্তর) বিভাগকে ২৫ হাজার মাস্ক দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, গত ২৯ মার্চ বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর প্রধানমন্ত্রীর করোনা মোকাবেলার তহবিলে ১০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেন। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে রাজধানীর দুঃস্থ ও নিম্ন আয়ের অনেক পরিবারকে খাদ্য সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে।

অপরদিকে, করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারকে সহায়তার অংশ হিসেবে পাঁচ হাজার শয্যার হাসপাতাল তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এতে রাজধানীর কুড়িলে বসুন্ধরার চারটি কনভেনশন সিটি ও একটি ট্রেড সেন্টারকে হাসপাতালে রূপান্তর করা হবে।

Bashundhara Group provides 50,000 masks, 500 PPE, foods to Bangladesh Navy

Bashundhara Group, leading business conglomerate of the country, on Sunday provided safety equipment and food to Bangladesh Navy as a part of their contributions to the Government’s ongoing battle on corona situation.

Bashundhara Group Managing Director Sayem Sobhan Anvir and Vice Chairman Safwan Sobhan Tasvir jointly handed over the medical supplies and food to Chief of Naval Staff Admiral Aurangzeb Chowdhury at Naval Headquarters in the capital on Sunday morning.

The medical supplies include 50,000 masks, 500 Personal Protective Equipment (PPE) and seven hundred packets of food.
Earlier on Saturday, Bashundhara provided 25,000 facial masks to Dhaka Metropolitan Police for safety of its members, who are playing frontline role to combat novel corona virus outbreak.

On Wednesday, the group handed over 1,000 PPE and 50,000 masks to the Directorate General of Medical Service (DGMS).

Bashundhara Group also donated Tk 100 million to the Prime Minister’s Relief Fund. Besides, the business conglomerate is going to establish a 5,000-bed hospital for the treatment of corona infected patients in the country.

The Group is also distributing essential commodities everyday to the people, who are living from hand to mouth, in Dhaka.